Physician | Author | Blogger

এলএসডি ও ক্রাশরোগ

এক নজরে

গত ১৫ মে নিহত হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এলএসডির সন্ধান পায় ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামের ইমাম মুজিবুর রহমানের ছেলে হাফিজুর রাত পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনে ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে দা নিয়ে নিজের গলা নিজেই কেটে ফেলেন। তখন হাফিজুর মারা গেলেও তাঁর পরিচয় শনাক্ত হয়নি। ঘটনার আট দিন পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তাঁর লাশ শনাক্ত করে পরিবার। পরে গোয়েন্দা বিভাগ অভিযান চালিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেন। তাঁরা হলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র সাদমান সাকিব (রূপল) ও আসহাব ওয়াদুদ (তুর্জ) এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র আদিব আশরাফ।এই ঘটনার পর এলএসডি নতুন করে আলোচনায় আসে। (প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ)

এই ঘটনার পর আরেক নাটক শুরু হয়। এই মাদক ব্যবসায়ীদের উপর শহুরে মধ্যবিত্ত সমাজের অনেক মেয়ে ক্রাশ (!) খাওয়া শুরু করে। কয়েকজন ডাক্তারকে দেখলাম এই মানসিকতাকে হিব্রিস্টোফিলিয়া আখ্যা দিয়ে গণহারে তাদের সবাইকে হিব্রিস্টোফিলিক বানায়া দিচ্ছে৷ হিব্রিস্টোফিলিকরা ড্রাগ এডিকটেড, সিরিয়াল কিলার, রেপিস্ট—এমন লোকদের প্রতি আকর্ষিত হয় বা তাদের প্রতি যৌনাকাঙখা পোষণ করে।

আমাদের চিন্তার সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা যে যে ফিল্ডে পড়াশোনা করেছি সেইটা দিয়ে সবকিছুকে বিচার করতে চাই। একজন ডাক্তার চায় প্রায় সবকিছুকে রোগ বানায়া বিচার করতে। ইঞ্জিনিয়ার চায় সবকিছুকে যন্ত্র, যান্ত্রিক ভেবে ব্যাখ্যা দিতে। কবিরা সবকিছু সাহিত্য দিয়া মাপে, কেউ কেউ তো বলে বিজ্ঞান মিথ্যা, আমাদের জন্য ক্ষতিকর।

এই কুয়োর ব্যাং টাইপের চিন্তাধারা থেকে বের হতে হবে।

যেখানে ডমিনেন্ট কালচারে টিভি সিরিজ আর মুভিতে সবচেয়ে ক্যারিশমাটিক, মাসকুলিন ফিগারগুলো হয় গড ফাদার, ডন, মাদক ব্যবসায়ী, ভাড়াটে খুনি এমনকি লুসিফার পর্যন্ত—সেখানে মধ্যবিত্তের এই পশ হতে চাওয়া নেটফ্লিক্স জেনারেশানের মেয়েদের রিয়েল লাইফেও এই টাইপের ফ্যাসিনেশনের থাকবে এতে অবাক হওয়ার কি আছে! এর জন্য হিব্রিস্টো পর্যন্ত যাওয়ার দরকারই বা কি?

হ্যা, কারো কারো এই সমস্যা আছে হয়তো, বাট ক্রাইমকে ও ক্রাইমলর্ডকে কুল বানানো তো এই লিবারেল কালচারেরই অংশ। তাই গণহারে ক্রাশ খেয়ে হাত পা ভেঙ্গে ফেললেও খুব কী অবাক হওয়া উচিত?

যে জেনারেশান লুক, স্মাইল, হেয়ার কাট, শ্মশ্রুহীন মাসকুলিনিটি দেখে বেড পার্টনার ঠিক করতে ব্যাকুল তাদের থেকে এর চেয়ে বেশি কী আশা করা যায়? নৈতিকতা, মনুষ্যত্ব এসব আমরা ছেড়েছি আগেই। যখন ভোগই একমাত্র আরাধ্য তখন মাদক ব্যাবসায়ী কি আর সিরিয়াল কিলারই বা-কি—গা-গতরেরই আকর্ষণ ক্রাশ খাওয়ার প্রধান নিয়ামক।

Share This
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email
Related Articles
Recent Articles

রাফান আহমেদ-এর বইসমূহ

আলাদাবইওয়াফিলাইফ

Copyright © Rafan Ahmed

No part of the website or posts can be published elsewhere without prior permission from author.  

Copyright © 2021 All rights reserved

error: Content is protected !!