একজন মানুষের মানসিকতার একটা পরিচায়ক হলো তার বন্ধুমহল। বলা হয় A man is known by the company he keeps। যার যেমন জীবনবোধ তার বন্ধুমহল, পঠন-পাঠন, সংস্কৃতিবোধ তেমন হয়। একটা ঘটনা বলি।
মেডিকেলে পড়ার সময় আমার এক জুনিয়র হঠাত বদলে যেতে লাগলো। আগে মসজিদে পেতাম, এখন কোনো হদিস নাই। খানাতল্লাসী করে জানলাম তার বন্ধুমহল বদলেছে, বদলেছে পাঠের মেজাজ। আমাকে প্রশ্ন করতো মাঝেমাঝে। আমি অল্প করে বুঝিয়ে বই পড়তে বলতাম। এমনকি বই পৌছে দেয়ারও ব্যবস্থা করতাম। কিন্তু বিধিবাম! মাসের পর মাসও সে বই খুলতো না। শেষকালে অত্যাচারিদের পক্ষ নিয়ে অত্যাচারিতদের শোষণের চোরাগলিতে ও মনস্থির করলো। বুঝতে পারলো না মুক্ত মানে নি, মুক্তিই বা কি জিনিস। তোতাপাখিরা যা বলে তা বুঝে বলে না, অনুকরণ করে কেবল। এতেই আমরা মুগ্ধ।
আরেকজন কলিগের কথা বলি। বেশ মেধাবি ছাত্র ছিল সে। আমার যে পড়া পড়তে দুইদিন লাগত, সেটা একরাতেই পড়ে ফেলতে পারত সে। ১ম বর্ষে সবকিছু ভালই যাচ্ছিল, এক পর্যায়ে বন্ধু মহলে হেলমেট ঢুকলো। বড় ভাইদের সাথে সময় দেয়া অনেক বেড়ে গেল। এভাবে পথ থেকে সরে গেল সে। আমি যখন ফাইনাল প্রফ পাশ করি, তখনও সে ২য় প্রফ পাশ করতে পারে নি।
বন্ধু নির্বাচনে খুবই সতর্কতা জরুরি। তারা দুনিয়া ও পরজীবনের পাথেয় জোগাড়ে সাহায্যকারী বা পথভ্রষ্টকারী দুই হতে পারে। বিচারের দিনে আমরা যেন তাদের মত আক্ষেপ না করি যারা বলবে:
يَٰوَيْلَتَىٰ لَيْتَنِى لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيلًا
হায় দুর্ভোগ আমার! আমি যদি অমুককে বন্ধু রূপে গ্রহণ না করতাম! (২৫:২৮)