গর্ভবতী একজন নারীকে প্রশ্ন করা হচ্ছেঃ
— আপা ছেলে না মেয়ে?
উত্তরে তিনি বললেনঃ
— মানুষ।
আপাত দৃষ্টিতে কথাটা সঠিক মনে হলেও এখানে শুভঙ্করের ফাঁকি আছে।
গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে এর উত্তরে মানুষ বলতে বুঝানো হতে পারে—যৌন পরিচয় নির্ধারিত ভাবার দরকার নাই। বড় হয়ে সে যেই লিঙ্গ ইচ্ছা সেই লিঙ্গ বেছে নিবে৷ তাই সে চাইলে স-ম-কা-মি, ট্রানস, কুইয়ার হ্যান ত্যান হতে পারবে। কিন্তু এখানে লিবারেলবাদিরা দুইটা সমস্যায় পড়বে৷
১. যে সকল নারিবাদিরা অ্যাবর্শন বা গর্ভপাত করা নৈতিক বা নারীর অধিকার বলে প্রচার করে তাদের প্রতি প্রশ্ন আসে—আপনি কী তাহলে মানুষ হত্যা নৈতিক মনে করেন?! আপনার দেহ আপনার সিদ্ধান্ত বুঝলাম, কিন্তু মানুষ মারার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে?
২. যারা বলে যৌনতা বিশেষ করে স-ম-কা-মি বিকৃতি জিনগত, প্রকৃতি নির্ধারিত তারা কী মেনে নিবে আসলে এই বিকৃতি আসলে প্রকৃতি কর্তৃক নির্ধারিত কিছু না, কেউ স-ম-কা-মি হয়ে জন্মায় না, এটা স্রেফ চয়েজ, এখানে কোনো বিজ্ঞান নেই? স্রেফ প্রবৃত্তির নেশা!
মানবে?
আরেকটা প্রশ্ন হলো, মানুষ কাকে বলে? বিবর্তিত বানর জাতীয় প্রাণি এই তো? তাই যদি হয় ‘মানুষ’ এর আলাদা কোনো মূল্য বা ভ্যালু কোথা থেকে আসে? একদল বানরকে কখনো বানরাধিকার নিয়ে সোচ্চার হতে দেখেছেন? ‘মানুষ’ বলে যে আলাদা কিছু আছে সেটা কেবল ধর্ম থেকে আসা। ধর্ম বাদ দিলে “সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই” এইটা একটা ফাপা বুলিমাত্র। নাস্তিক ব্রিটিশ দার্শনিক জন গ্রে এই দিক আলোকপাত করে বলেনঃ
❝সেকুলার মানবতাবাদিরা মরমিবাদ ও ধর্মকে নিয়ে সারাবেলা ব্যাঙ্গবিদ্রুপে মেতে থাকে। কিন্তু ‘সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’ এই কথাকে সমর্থন করা বা এর মর্মোদ্ধার করা কোনোটাই সম্ভব না যদি স্রষ্টার ধারণা না থাকে।❞
(দ্য সাইলেনস অফ এনিমাল, পৃ. ৭৭)
যদি ধর্ম থেকেই মানুষের সংজ্ঞা নেন তাহলে নৈতিকতা কোথা থেকে বানাচ্ছেন? আর যদি ধর্ম থেকে মানুষের সংজ্ঞা না নেন তাহলে আবার মানুষ উত্তর পেয়ে আপনি এত তৃপ্ত কেন? খোলাখুলি স্বীকার করলেই হয় আপনি মানুষ নামের একটা পশু৷ উহ স্যরি, তখন তো আবার নিজেকে ‘মানুষ’ ভাবার আত্মশ্লাঘা কাজ করবে না। আবার সমাজনীতি, রাজনীতি এসবও খাটবে না।
পশুর এসব লাগে না তো।
ফিচার ইমেজ: ফেসবুক থেকে সংগৃহিত ও সম্পাদিত