ফেসবুকে এক ছোটভাই মেসেজ পাঠিয়েছেন:
❝আপনি খেয়াল করেছেন কিনা জানিনা ওরিয়েন্টালিজম, ইসলামিক এপিস্টেমোলজি এগুলা ইয়াং জেনারেশনের মধ্যে কুল ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনারাই। চিন্তার শেকড় থেকে বের করার চেষ্টা করেছেন সাধারণ জনগনকে। অনেক ইয়াং স্কুল গোয়িং ছেলেপেলেদের দেখি এই বিষয় গুলা নিয়া কথা বলতে। মুসলিমদের চিন্তার দ্বার অনেকটা প্রসারিত হয়েছে আপনাদের কারনে।এখন আর আগের মতো বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে জাডজ করে না পাবলিক। এইটা কি সফলতা নয়?এই অল্প সময়েই অনেককে সেকু শেকড় থেকে বের করে ভিন্ন আঙ্গিকে ভাবতে শিখিয়েছেন।যারা একাডেমিয়াতে আছে তারা কেন এই বিষয়গুলা পপুলারাইজ করেনাই? কেন তারা তাদের স্ট্রং যুক্তি দিয়া এইসব বিষয়গুলা হ্যান্ডেল করেনাই? আমার প্রশ্নগুলো কেমন শোনালো তা জানিনা। তবে আমি জানি পড়াশোনা অনগোয়িং বিষয়। হয়তো ভবিষ্যতে আপনিও একাডেমিকভাবে এই বিষয়গুলা নিয়া সরাসরি ট্রেইনিং নিবেন।❞
ছোটভাইয়ের এই বার্তায় কিছু আশার দিক আছে, কিছু চিন্তার দিকও আছে।
আশার দিক হলো, ইসলাম যে একটা কুল সিস্টেম এইটা তরুণদের কেউ কেউ বুঝতে শুরু করছে। কিন্তু আমরা যদি একটা সাসটেইনড কালচারার মিলিউ তৈরি না করি তাহলে এই ইয়াং ভাইবোনেরা ভার্সিটিতে গিয়ে ইসলামত্যাগ করতে দেরি করবে না। আজকে জ্বি ভাই, সহমত ভাই বলে কালকে শাতিম হবে। মানুষ সামাজিক জীব, জনে জনে যুক্তিবুদ্ধি খাটায়া চলে না। অধিকাংশ মানুষ মূলত প্রচলনের অনুসরণ করে। তাই একটা কালচার একটা জেনারেশন তৈরি করা জরুরি।
চিন্তার দিক হলো এইটা শুনে আপনি আমারে থামায়া দিবেন। বলবেন, ভাই সেকু কালচার তৈরি হইছে ফান্ডিং আর সোশিও পলিটিক্যাল পাওয়ার নিয়া। আমাদের সেটা নাই।
হ্যা আপনার কথা ঠিক।
আমাদের এই পাওয়ার এচিভ করতে না দেয়াই প্রগতির মূলমন্ত্র। পোস্ট-কলোনিয়াল স্টেটগুলারে এমনেই বজায় রাখা হয় যাতে ওয়ার্ল্ড অর্ডারের সাথে খাপ খাওয়া লিবারেল কালচারের বিপরীতে কোনো পলিটিক্যালি পাওয়ারফুল কালচার না দাড়াতে পারে। এর অনুসঙ্গ হিসেবে আছে খিউল খিউল নিউজ মিডিয়া, সেলিব্রেটি, মুভি-টিভি সিরিজ আর তলে তলে ডিপ্লোম্যাসি, ক্যু, এসাসিনেশন, লোকাল টোটালিটারিয়ান রেজিমকে বজায় রাখা ইত্যাদি ইত্যাদি।
এতসব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা কিছু হলেও করতে পারতাম। একটা অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম দাড় করানো, মেন্টাল হেলথ, সেক্সুয়াল হেলথ নিয়ে কথা বলা। লিবারেল কালচার থেকে না ইম্পলিসিটলি আমাদের কালচার থেকেই। এসব দিক থেকে আমরা খুবই স্ট্রং পজিশন রাখি-অন্তত তাত্ত্বিকভাবে। কিন্তু বারবার বলে বলে মানুষকে বোঝাতে পারছি না। কারণ আমরা বলিই না।
সেকুলাররা নানাবিধ এনজিও, অ্যাম্বাসি, জাতিসংঘের নানা প্রজেক্ট, ব্যাক এসব থেকে ফান্ডিং পায়। আমাদের ফান্ড করার কেউই নাই, ফান্ড করলেও শাহবাগিরা গঙ্গি গঙ্গি বলে দখল করে নিবে। রকমারি সেকুলার প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও দখল করে নিতে চাইল দেখলেন না? কারণ তার অপরাধ ছিল না চাইতেও স্রেফ ব্যবসার স্বার্থে তারা আমজনতার মাঝে দমে থাকা কালচারকে লাইম লাইটে নিয়া আসছিল। এইটা বুর্জোয়াদের সহ্য হয় নাই।
এর জন্যই ক্ষমতা লাগে। যার ক্ষমতা আছে মানুষ তারেই কুল ভেবে ফলো করে। বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ—আস্তিক বা নাস্তিক—যুক্তিবুদ্ধি বুঝে না। তারা পরিবেশকে ফলো করে। আমরা যদি পরিবেশ বদলাতে না পারি তাহলে হাজার হাজার বইপত্র নিয়াও আমরা পিছিয়ে যাবো।